ঢাকা | বঙ্গাব্দ

রংপুরে সেতুর খবর নেই,পিলার দেখেই কাটল ৫ বছর

  • প্রতিনিধির নাম :মাটি মামুন রংপুর : | নিউজ প্রকাশের তারিখ : Apr 20, 2025 ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ 1276 জন
রংপুরে সেতুর খবর নেই,পিলার দেখেই কাটল ৫ বছর ছবির ক্যাপশন: স্বাধীন ৭১
ad728
নদীর বুকে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি পিলার। দীর্ঘ পাঁচ বছরেও নির্মাণ হয়নি সেতু। ফলে ভোগান্তিতে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা পারের সাত গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।

হারাগাছ পৌরসভার প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ ও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পৌরসভার উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে দুটি দরপত্রের মাধ্যমে পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাংলাবাজার দক্ষিণ ঠাকুরদাস মস্তেরপাড় জাবের আলীর ঘাট এলাকায় মরা তিস্তা নদীর ওপর ৭৬ মিটার দীর্ঘ পাইল সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে।

 দু দফায় যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৪ লাখ ৬৯ হাজার ৭৩৩ টাকা। তবে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখায় সেতুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।স্থানীয়রা জানান, সেতুটি নির্মাণ হলে উপজেলা ও পৌর সদরের সঙ্গে সেতুবন্ধন তৈরি হতো চর এরাকার মানুষদের।

ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেত সাত গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার বাসিন্দা।সুবিধার আওতায় আসত যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য। বাড়ত কর্মসংস্থানও। কিন্তু প্রায় পাঁচ বছর ধরে সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় যাতায়াতের এ সুবিধা অধরাই থেকে গেছে। নদীর বুকে এখন দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি পিলার।মায়ারচর গফফারটারী গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘চরের মানুষদের জীবন এমনিতেই দুঃখে কষ্টে ভরা। যা আবাদ করি ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় অল্প দামেই বিক্রি করতে হয়।

মরা তিস্তার ওপর ব্রিজটা হইলে আমাদের জন্য শহরে যাওয়া সহজ হইতো। কিন্ত পাঁচ ছয় বছর ধরে শুধু পিলার তুলে রেখে দিছে, কাজ আর করে না। চর পল্লীমারী গ্রামের কৃষক সালাম মিয়া বলেন, ‘সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য বিভিন্ন বাজারে নিতে পারছি না। বাধ্য হয়ে কম দামে ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকার যদি একটু নজর দিত, তাহলে আমরা চরের মানুষের অনেক উপকার হইতো।

হারাগাছ পৌরসভার ঠাকুরদাস গ্রামের ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শুনেছি নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় সেতুটির নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এই অজুহাত আর কত দিন কাজ বন্ধ রাখা যায় আমার জানা নাই। আমরা চাই অতি দ্রুত সেতুটির কাজশেষ করে জনসাধারনের জন্য খুলে দেয়া হোক।

 এ বিষয়ে কাউনিয়ার হারাগাছ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) হামিদুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু পৌর অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করা সম্ভব ছিল না। তাই উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে দুই অর্থবছরে পৃথক দরপত্রের মাধ্যমে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। যেখানে প্রথম দরপত্রে ব্যায় ধরা হয়েছিল ২৮ লাখ টাকা আর দ্বিতীয় দরপত্রে ২৬ লাখ ৬৯ হাজার ৭৩৩ টাকা।

প্রথম দরপত্রে কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক অসুস্থ থাকায় সেতুটির ২০ ভাগ কাজ করে বাকি কাজ বন্ধ রেখেছে। দ্বিতীয় দরপত্রে কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নুর এন্টারপ্রাইজ এরইমধ্যে ১৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকা তুলে নিয়েছে, তাদের সেতুর বাকি কাজ শুরু করার তাগিদপত্র দেওয়া হয়েছে। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার প্রশাসক (সহকারী কমিশনার (ভূমি) লোকমান হোসেন জানান, সেতুটির নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার বিষয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। দ্বিতীয় দরপত্রের কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যদি দ্রুত কাজ শুরু না করলে কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার আহব্বান করা হবে।

নিউজটি পোস্ট করেছেন : মোঃ সেলিম মিয়া

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ