ঢাকা | বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে ফসলের মাঠে বাদামি গাছফড়িংয়ের উপদ্রব, পাকার আগেই ধান কাটছেন কৃষকেরা

  • আপলোড তারিখঃ 06-02-2024 ইং |
  • নিউজটি দেখেছেনঃ 300196 জন
নোয়াখালীতে ফসলের মাঠে বাদামি গাছফড়িংয়ের উপদ্রব, পাকার আগেই ধান কাটছেন কৃষকেরা ছবির ক্যাপশন: নোয়াখালীতে ফসলের মাঠে বাদামি গাছফড়িংয়ের উপদ্রব, পাকার আগেই ধান কাটছেন কৃষকেরা
LaraTemplate

নোয়াখালীতে ফসলের মাঠে বাদামি গাছফড়িংয়ের উপদ্রব, পাকার আগেই ধান কাটছেন কৃষকেরা



নিজস্ব প্রতিবেদক:



নোয়াখালীর শস্যভান্ডার খ্যাত সুবর্ণচর উপজেলায় আমন ধানের খেতে বেড়েছে বাদামি গাছফড়িংয়ের উপদ্রব। ধান পাকার মুহূর্তে এই পোকার উপদ্রবে নষ্ট হচ্ছে খেত। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। এ অবস্থায় কৃষকদের কেউ কেউ পুরোপুরি পাকার আগেই কেটে ফেলছেন ধান, কেউ আবার কীটনাশক ছিটিয়ে ফসল রক্ষার চেষ্টা করছেন।


সম্প্রতি সুবর্ণচর উপজেলার চর জুবলী ও চর জব্বর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁর জানান, পাক ধরার পর ধানগুলো আরও পরিপক্ব হওয়ার পরিবর্তে শুকিয়ে যাচ্ছে। ধানের শিষ পাউডারের মতো গুঁড়া হয়ে যাচ্ছে।


চর জুবলী গ্রামের কৃষক আবদুল ওহাব বলেন, ধারদেনা করে প্রায় ১৫ একর জমিতে তিনি ব্রি-৫২ ও ৮৭ জাতের রোপা আমন ধান চাষ করেন। ধানে পাক ধরার পর হঠাৎ লক্ষ করেন শিষগুলো কোনোটি মরে চিটা হয়ে যাচ্ছে, আবার কোনোটি শুকিয়ে হলুদ পাউডার হয়ে ঝরে পড়ছে। তাই তিনি বাধ্য হয়ে ধান কেটে ফেলছেন।


আবদুল ওহাব বলেন, আগে খেতে স্বর্ণা জাতের ধান চাষ করতেন তিনি। কিন্তু কৃষি বিভাগ থেকে স্বর্ণা ধান চাষে বরাবরই নিরুৎসাহিত করা হয়। যার কারণে এবার তিনি ব্রি-৫২ ও ৮৭ জাতের ধান চাষ করেছেন। আগে খেত থেকে প্রতি আমন মৌসুমে একরপ্রতি ১২০ মণ পর্যন্ত ধান ঘরে তুলেছেন। এবার যে অবস্থা, তাতে একরপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ মণও ফলন মিলবে না।


চর জব্বর গ্রামের কৃষক আমিন সর্দার চাষ করেছেন ১৮ একর জমিতে। তাঁর খেতের ফসলেরও একই অবস্থা। তিনি বলেন, গ্রামের প্রায় সব কৃষকেরই একই দশা। এ অবস্থায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে গ্রামের মসজিদে মসজিদে চিঠি পাঠিয়ে কৃষকদের কীটনাশক স্প্রে করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কীটনাশক ছিটিয়ে লাভ হচ্ছে না।


একই গ্রামের আরেক কৃষক মো. শাহজাহানকে খেতে কীটনাশক ছিটাতে দেখা যায়। তিনি বলেন, তাঁর খেতের প্রায় ২০ শতাংশ ধানের গাছ এরই মধ্যে মরে গেছে। ধানগুলো শুকিয়ে গেছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে তিনি নিজেই ওষুধ ছিটাচ্ছেন। এরপরও অবস্থার উন্নতি না হলে আর কোনো উপায় থাকবে না।


জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে দিনে গরম, রাতে কিছুটা ঠান্ডা ও কুয়াশা। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে বৃষ্টির কারণে জমিতে বাদামি গাছফড়িংয়ের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পরপরই তিনি কৃষকদের এ পোকার ব্যাপারে সচেতন করতে উপজেলার ৫২০টি মসজিদে চিঠি পাঠিয়েছেন, যা এরই মধ্যে ইমামেরা প্রচার করেছেন। এ ছাড়া কৃষকদের ধানগাছের গোড়ায় স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


উপজেলায় কী পরিমাণ ফসলি জমিতে বাদামি গাছফড়িংয়ে আক্রান্ত, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনো উপজেলা কৃষি বিভাগের কাছে নেই বলে জানান তিনি।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শহীদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বাদামি গাছফড়িং পোকার উপদ্রব থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।


একই গ্রামের আরেক কৃষক মো. ইব্রাহিম ওরফে বাচ্চু বলেন, তিনি দুই একর জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন। আর ১০ থেকে ১৫ দিন পর ধান ঘরে তোলার ইচ্ছা ছিল তার। তবে শেষ মুহূর্তে এসে ধানের শিষগুলো শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। প্রথমে খেতের এক-দুই স্থানে দেখা গেলেও যত দিন যাচ্ছে, খেত তত বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ সাইফুল ইসলাম সানি

সর্বশেষ সংবাদ
notebook

কয়রার দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন