এক কথায় উত্তর 'কপালে ছিল না! কারণটা খুব চমকপ্রদ ৷ পৃথিবীর বিভিন্ন শিলা পরীক্ষণ এবং তাতে আটকে থাকা জীবাশ্মের কার্বন বা রেডিও ডেটিং করে জানা যায় যে সেই শিলা কীভাবে ও কত বছর আগে তৈরি হয়েছে ৷
আমাদের এই বঙ্গীয় বদ্বীপ প্রসঙ্গে আসি ৷ প্রায় ১৮ কোটি বছর আগে পৃথিবীর সমস্ত মহাদেশ একত্রিতভাবে একটি বৃহৎ ভূখণ্ড ছিল যার নাম প্যাঞ্জিয়া ৷ ১৮ কোটি বছর আগে প্যাঞ্জিয়া দুভাগে বিভক্ত হয় ৷ দক্ষিণভাগের নাম হলো গন্ডোয়ানাল্যান্ড ৷ এখানেই অ্যান্টার্কটিকার কাছে আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে যুক্ত ছিল ভারত উপমহাদেশ ৷ তখন বঙ্গীয় বদ্বীপ অর্থাৎ বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডই ছিল না বরং ঐ জায়গাটা সমুদ্র নিমজ্জিত ছিল ৷ ১৩ - ১৭ কোটি বছর আগে ভারত উপমহাদেশ অস্ট্রেলিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে উত্তরে ধাবিত হয় ৷ বাংলাদেশের সিলেট ও ভারতের শিলং মালভূমিতে যে শিলা পাওয়া যায় সেই একই রকম পশ্চিম অস্ট্রেলিয়াতেও পাওয়া গেছে ৷
৯ কোটি বছর আগে ভারতীয় ভূত্বকীয় পাতের সাথে বর্মী পাতের সংঘর্ষ হয় ৷ দুই পাত একীভূত হয়ে উত্তরে যেতে থাকে ৷ এরপর থেকে দুই পাতের নদীগুলো পলিমাটি এনে বর্তমান বাংলাদেশের স্থানে যে সমুদ্র ছিল তাতে জমা করতে থাকে ৷ সাড়ে ৫ কোটি বছর আগে মিলিত ভারত-বার্মা ইউরেশীয় পাতের সাথে সজোরে ধাক্কা খায় ৷ এই ধাক্কায় ইউরেশীয় পাত ভাঁজ হয়ে তৈরি হয় ভঙ্গিল বা ভাঁজ পর্বতমালা হিমালয় ৷ এরপরই জন্ম হয় ব্রহ্মপুত্র ও উত্তরাখণ্ডের ভাগীরথী ৷ ভাগীরথী নদী অলকনন্দা নদীর সাথে মিলিত হয়ে তৈরি করে গঙ্গা নদী ৷ মেঘালয়ের বরাক নদী, আসামের ব্রহ্মপুত্র ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে আসা গঙ্গা নদী পলিমাটি ফেলে ফেলে তৈরি করে বঙ্গীয় বদ্বীপ নামক এই সমভূমি ৷ বঙ্গীয় বদ্বীপ ৫ কোটি বছর আগে ৷ ডাইনোসর তো এরও দেড় কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয় ৷
মানে ডাইনোসর বিলুপ্তির এক কোটি বছর পর হিমালয়ের জন্ম, এরপর গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র নদীর জন্ম এবং এর ৫০ লক্ষ বছর পর বঙ্গীয় বদ্বীপের জন্ম ৷ সুতরাং ডাইনোসররা আমাদের দেশ দেখতেই পায়নি ৷ তাহলে জীবাশ্ম আসবে কীভাবে ?