ঢাকা | বঙ্গাব্দ

আলিফ বাস খাদে পরে ৩ জনের মৃত্যু

  • আপলোড তারিখঃ 02-12-2024 ইং |
  • নিউজটি দেখেছেনঃ 80942 জন
আলিফ বাস খাদে পরে ৩ জনের মৃত্যু ছবির ক্যাপশন: স্বাধীন ৭১
LaraTemplate

বাসে থাকা এক যাত্রীর বক্তব্য প্রথমে বলতে চাই আলহামদুলিল্লাহ বেঁচে আছি। একটা ঘটনা ঘটলে মানুষ যে সেটা নিয়ে কত রকম দাড় করায় সেটা আজকে চোখের সামনে না দেখলে হয়তো বুঝতাম না। আজকে খুব সম্ভবত বিকাল সাড়ে পাঁচটায় ১০ তলা এলাকায় একটা বাস দূর্ঘটনা ঘটে। আমি সেই বাসের সামনের দিকে বাম পাশের সীটে বসা একজন যাত্রী ছিলাম।


পুরা ঘটনার সূত্রপাত হয় দুইটি বাসের পাল্লা দিয়ে বাস চালানো থেকে। প্রথমে আমি যে বাসে ছিলাম (মানে দূর্ঘটনা ঘটা বাস) সেই বাস টা একটা বাস কে ওভার টেক করে (এখানে বলে রাখা ভালো দুটো একই কোম্পানির বাস ছিলো)। বাসের একটা পরিবার মেরাদিয়া নামবে তাই তারা ড্রাইভার কে বার বার বাস থামাতে বলে কিন্তু ড্রাইভারের মাথায় তখন চিন্তা পিছনের বাসটা তাকে আবার না পিছে ফেলে দেয়। তাই সে ডান পাশের মিরর এ তাকিয়ে থেকে যাত্রি নামাচ্ছিলো। যে পরিবার টি বাস থেকে নামবে তাদের পরিবারের শেষ সদস্য যখন বাস থেকে নামবে (একজন ভদ্র মহিলা) তখন পিছনে থাকা বাস টা আমাদের বাসটাকে (দূর্ঘটনা ঘটা বাস) ওভারটেক করতে চায়। তাই ড্রাইভার তাকে ওভার টেক করার সুযোগ না দিয়ে পিকআপে চাপ দেয় আর বাস টান মারে।


ফলে যে ভদ্র মহিলা বাস থেকে নামবে ওনার শাড়ি আটকে পড়ে বাসের দরজার কোন একটা কিছুর সাথে। এদিকে ড্রাইভারের যেহেতু খেয়াল পিছনের গাড়ির দিকে (যে তাকে কিছুতেই আগে যেতে দেওয়া যাবে না। তাই বাস টান দেয়।) তাই ড্রাইভার আর মহিলার দিকে খেয়ালি করে নি। মহিলাকে নিয়ে বাস কয়েক হাত সামনে চলে যায়। যেহেতু মহিলার শাড়ি বাসের দরজার সাথে আটকে ছিলো তাই মহিলা চিৎকার করছিলো আর বাসের সাথে হেটে হেটে কয়েক হাত চলে আসে। আলহামদুলিল্লাহ মহিলা চাকার নিচে পড়ে নাই। কিন্তু মহিলার হাসবেন্ড/ভাই/আত্মীয় কে হবে আমি সিউর না। তিনি আরেকজনকে নিয়ে বাসে উঠে ড্রাইভার কে গালাগাল দিতে থাকে মার মুখি ভঙ্গিতে। ড্রাইভার নিজের ভুল স্বীকার না করে ওনার সাথে একই ভাবে মারমুখি ভঙ্গিতে কথা বলতে থাকে। তখন ওই লোকের মেজাজ খারাপ হয়ে যায় আর ড্রাইভার এর গায়ে হাত তুলে বসে। ড্রাইভার ও কম যায় না। পানির বোতল নিয়ে সেই লোক কে মারতে আসে। সাথে সাথে বাসের পরিবেশ গরম হয়ে যায়।


কয়েকজন মিলে ড্রাইভার আর হেল্পার কে মারতে থাকে। আর ড্রাইভার আর হেল্পার ও তাদের কে মারার চেষ্টা করে। কিন্তু ৬-৭ জনের কাছে ড্রাইভার আর হেল্পার পেরে উঠে না। আমার পিছনে একজন বয়স্ক মুরুব্বি বলছিলো ভাই ছাড়িয়ে দেন এদের। কিন্তু সামনে যাব কিভাবে?! যেভাবে তারা কিল ঘুষি দিচ্ছে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে। এর পরে আমার একটা জিনিসই মনে আছে। ড্রাইভার তাদের সাথে না পেরে মার খেয়ে ২ সেকেন্ড সে লোকের দিকে তাকালো। আর গিয়ার শিফট করে জোরে গাড়ি টান। বাসের পিছনে মানুষ তখন অনেক চিৎকার করছিলো। মানুষ বার বার বাস থামানোর কথা বলছিলো।


আমি ভেবেছিলাম ড্রাইভার হয়তো চাচ্ছে যে এই লোক কে বাস থেকে নামতে দিবে না।ড্রাইভারের মাথা তখন গরম। ড্রাইভার বাস নামিয়ে দেয় সোজা খালের মধ্যে। বাস পানিতে পড়ার সাথে সাথে আমি বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। আমার পাশের ব্যক্তি আমার মাথার উপরে এসে পড়ে আর আমার মাথা কিসের সাথে যেন বাড়ি খায়। শরীর এর বিভিন্ন যায়গায় আমি বাড়ি খাই তখন ইমিডিয়েট ব্যথা না করলেও এখন প্রচন্ড ব্যথা করছে।


আমি পানির নিচে তলিয়ে গেছিলাম অন্ধকার লাগছিলো উপরে উঠে আসার কোন পথ খুজে পাচ্ছিলাম না। বেশ কিচ্ছুক্ষণ পানির নিচে থাকার পর আমি আমার মাথা উপরে তুলতে সক্ষম হই। পরে জানালা দিয়ে কোন রকমে মাথা আর হাত টা বের করলে একজন পাঞ্জাবি পরা ভদ্রলোক খুব সম্ভবত লোক না। মাদ্রাসার কোন ছেলে হবে। সে আমাকে টেনে বাসের ভিতর থেকে বের করে।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ স্বাধীন ৭১

সর্বশেষ সংবাদ
notebook

কয়রার দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন