বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর দেশ পুনরায় স্বাভাবিক গতিতে চলতে শুরু করেছে। চট্টগ্রামের পটিয়ায় সড়কে যানবাহনের চাপ ধীরে ধীরে বাড়ছে কিছুক্ষণ পরপর ব্যস্ততম মোড়গুলোতে দেখা যাচ্ছে স্বল্প আকারের যানজট। আর এই যানজট নিপুণ দক্ষতায় নিরসন করে যাচ্ছেন উপজেলার বিভিন্ন কলেজের কয়েকশত সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের এমন অভিনব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় কলেজ শিক্ষার্থীরা সড়কের মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে প্লেকার্ড হাতে নিয়ে যানজট নিরসনে ব্যস্ত সময় পার করছেন দেশ যত দিন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসবে তত দিন শিক্ষার্থীরা তাদের এই সেবা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার পৌর এলাকার ডাকবাংলো, বাসস্ট্যান্ড, থানার মোড়, মুন্সেফ বাজার, উপজেলা গেট, পটিয়া কলেজ গেট এলাকায় শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কয়েক গ্রুপে হয়ে ৩০-৬০ জন শিক্ষার্থী এই দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে। এ সময় সাধারণ মানুষেরা কর্মরত শিক্ষার্থীদের পাউরুটি, কলা ও কোমল পানীয় বিতরণ করেন।
পটিয়া সরকারি কলেজের বিবিএ শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন হৃদয় বলেন, ‘আমরা দেশ থেকে অন্যায়, অপরাধ, জুলুমবাজ ও স্বৈরাচারী শাসককে বিদায় করেছি। সরকার পতন হলেও রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে যাতে ভালো মানুষরা আসে সেইজন্য আমরা এখনো মাঠে আছি। ঘটে যাওয়া সহিংসতায় সারা দেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন এগুলোকে আমাদেরই বিনির্মাণ করতে হবে। দেশ যত দিন ঠিক না হচ্ছে আমরা আমাদের এই সেবা চালিয়ে যাব।
সিএনজি চালক শাকিল বলেন, ‘ছাত্ররা যেভাবে সড়ক নিয়ন্ত্রণ করছে, এটা সত্যিই অসাধারণ সারা দিনে কোথাও কোনো রকমের চাঁদা দিতে হয় নাই। এই ধারাটা যেন অব্যাহত থাকে।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক আব্দুল মান্নান জানান, আগে তারা যখন গাড়ি চালাত বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দিতে হত। সড়কে যানজট যেমন নেই তেমনি দিতে হয়নি কোনো ধরনের চাঁদা আমরা ছাত্রদের এই কাজে অনেক খুশি।
জেলা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিদুয়ান সিদ্দিকী জানান, উপজেলার বিভিন্ন কলেজ থেকে আসা শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় এই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারাও তাদের জায়গা থেকে আরও ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।