ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বিগত ২০০ বছর ধরে’ লিচুর আবাদ হচ্ছে কিশোরগঞ্জের মঙ্গলবাড়িয়ায়।

  • প্রতিনিধির নাম : | নিউজ প্রকাশের তারিখ : May 3, 2025 ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ 733 জন
বিগত ২০০ বছর ধরে’ লিচুর আবাদ হচ্ছে কিশোরগঞ্জের  মঙ্গলবাড়িয়ায়। ছবির ক্যাপশন:
ad728
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার লিচুর গ্রাম হিসেবে খ্যাত মঙ্গলবাড়িয়ায় এবার ফলটির বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার কৃষি বিভাগ জানায়, পাঁচ হাজারের বেশি লিচুগাছ থেকে এবার প্রায় ১০ কোটি টাকা বিক্রি হতে পারে।
স্থানীয় চাষিরা বলছেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে পাওয়া যেতে পারে ফলটি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বর্গকিলোমিটারের মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের প্রতিটি বাড়ির উঠান বা সামনের অংশ, পুকুরপাড়, খেতের আলসহ ফাঁকা জায়গায় লিচুগাছ লাগানো হয়েছে। দাম কিছুটা বেশি হলেও অন্য এলাকার লিচুর চেয়ে এই এলাকার লিচুর চাহিদা বেশি। গ্রামটিতে উৎপাদিত লিচুতে একধরনের মিষ্টি ঘ্রাণ আছে। বিচি ছোট হওয়ায় শাঁসের পরিমাণও বেশি। আর আকারেও বড়। এ ছাড়া এ লিচুর নজরকাড়া গোলাপি রং সহজেই ক্রেতাদের আকর্ষণ করে।

তবে দূরদুরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু দেশে ‘ব্র্যান্ড’ হয়ে যাওয়ায় দাম তুলনামূলক বেশি রাখা হয়। শুধু তা–ই নয়, অন্য জায়গা থেকে লিচু এনে সেগুলো মঙ্গলবাড়িয়ার বলে চালিয়ে দেন বিক্রেতারা।

গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আবদুর রহমান, মজিবুর রহমানসহ কয়েকজন জানান, তাঁরা প্রবীণদের কাছে শুনেছেন, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের এক ব্যক্তি চীনে গিয়েছিলেন।

১৮০২ সালের দিকে সেখান থেকে ফেরার সময় দুটি লিচুর চারা দেশে এনেছিলেন তিনি। এগুলো রোপণ করা হয়েছিল মঙ্গলবাড়িয়ায়। সেই থেকে গ্রামটিতে লিচু চাষের শুরু। তাই স্থানীয় লোকজনের দাবি, গ্রামটিতে লিচু চাষের ২২৩ বছরের ঐতিহ্য আছে।

লিচুগাছের নিচে পাহারায় ছিলেন মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, এবার তাঁর ১০টি বড়সহ মোট ২৬টি লিচুগাছ আছে। এসব গাছ থেকে ৫০ হাজারের বেশি লিচু পাওয়ার আশা করছেন তিনি। আর সেগুলো সংগ্রহ করে আগামী ৫ দিনের মধ্যে বিক্রি শুরু করবেন। তাঁর প্রত্যাশা, এবারও ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় ১০০ লিচু বিক্রি হবে।

মঙ্গলবাড়িয়া ফকির বাড়ির সাবেক কমিশনার শামিম মিয়ার বাড়িতে প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো বিশাল আকৃতির ৩০টি গাছসহ আরও ৬০ থেকে ৭০টি লিচুগাছ আছে। এসব গাছ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার লিচু বিক্রির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

এবার আবহাওয়ার কারণে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে জানিয়ে মামুন নিয়া নামের আরেক লিচুচাষি বলেন, তাঁর নিজের কোনো গাছ না থাকলেও এবার ৫টি বড় গাছসহ ২০টি লিচুগাছ কিনেছেন।স্থানীয় মঙ্গলবাড়িয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মাদুল্লাহ দাবি করেন, দেশের সীমান্ত পেরিয়ে গ্রামটির লিচু সৌদি আরব, দুবাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ও লন্ডনপ্রবাসীদের কাছে পাঠানো হয়।

পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-ই-আলম বলেন, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের বেলে ও দোআঁশ মাটি লিচু চাষের জন্য বেশ উপযোগী। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবার লিচুচাষিরা সময়মতো ওষুধ ব্যবহারসহ গাছ পরিচর্যা করায় তাঁরা বাম্পার ফলন পেয়েছেন। সঠিক দাম ও বেশি লাভের আশায় গ্রামটির অনেকেই লিচু চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এ কারণে এলাকাটিতে দিন দিন লিচুগাছের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রামটিতে দুই শতাধিক বাগান আছে। আর দেড় থেকে দুই হাজার লোক এর সঙ্গে জড়িত। এবার ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।




নিউজটি পোস্ট করেছেন : নিজাম উদ্দীন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
☆সোনার ছেলে☆

☆সোনার ছেলে☆