পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের হালিমপুর হিড়িন্দা বাজারে মঙ্গলবার (৩১শে ডিসেম্বর ২০২৪) দুপুর আড়াই টার সময় বিশিষ্ট কবি-কলামিস্ট, সাংবাদিক-গবেষক, পরিবেশ মানবাধিকার কর্মী প্রভাষক এস এম মনিরুজ্জামান আকাশকে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদর্শন করা হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, মঙ্গলবার দুপুর আড়াই টার দিকে সাংবাদিক প্রভাষক এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ হিড়িন্দা বাজার মসজিদে জোহর নামাজ আদায় করে চা পান করার জন্য মোঃ শফিকুল ইসলাম মোল্লার চা-স্টলে বসে চা পান করে উপস্থিত সাধারণ লোকজনের সাথে কথা বলতে ছিলেন।
এমন সময় উক্ত চা স্টলে উপস্থিত হন ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির অন্যতম নেতা মোঃ ময়নুল ইসলাম মোল্লা। তিনি বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রফেসর বয়েন উদ্দিন ডিগ্রি অনার্স কলেজের প্রভাষক এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ কে বিগত তিন/চার বছর আগের এক ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন যে, আমার ভাতিজা মোঃ শামীম রেজার নামে যে মামলা চলমান আছে তা উত্তোলন করে দিতে হবে এবং এই মামলা চালাতে যে খরচ হয়েছে সেই টাকাও ফেরত দিতে হবে। সাংবাদিক আকাশ বলেন, আপনি আমাকে এভাবে থ্রেট করতে পারেননা! ময়নুল ইসলাম মোল্লা বলেন যে, তোমার জন্যই শামীম রেজা আসামি পড়েছে অথচ তুমি কোন সহযোগিতা করো নাই! তুমি আওয়ামী লীগের সমর্থক আর বাদী পক্ষও আওয়ামী লীগ! তুমি মামলা তুলে দাও! না হলে তোমার মামলা খরচ হওয়া সব টাকা দিতে হবে।
সাংবাদিক আকাশ বলেন, আমি আটলংকা কলেজে চাকুরী করার সুবাদে আমার সহকর্মী কয়েকজন শিক্ষকের সাথে বসে আটলংকা হাইস্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দিন চা পান করছিলাম এবং ঐদিন হাইস্কুলের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতও ছিলাম। চা পান করার সময় আমার গ্রামের ছেলেরা সাইফুল ইসলামের দোকানে গিয়ে আমাদেরকে সালাম দেয় ও আমরা শিক্ষকেরা শামীম রেজাদের কয়েকজনকে চা পানের কথা বললে তারা চা পানে সম্মত হয় ও চা পান করার সময় হঠাৎ করে মোঃ নাগর ইসলাম (আমার খালাত ভাইয়ের ছেলে) সাইফুলের দোকানের কুঠার নিয়ে কাউকে আক্রমণ করতে উদ্যৃত হয়! আমি উপস্থিত শামীম রেজাসহ আমার গ্রামের ছেলে-পুলেদেরকে মারামারি ঠেকানোর জন্য বলি। পরে দেখি চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের বন্যাগাড়ী গ্রামের রানাকে রক্তাক্ত অবস্থায় লোকজন ধরাধরি করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। আমি তাৎক্ষণিক ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করি।
প্রভাষক আকাশ আরো বেলন, পরবর্তী কালে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। মামলা হওয়ার পর শুনতে পাই যে আসামীরা যশোর কিশোর সংশোধনী কারাগারে আটক আছে। ২০২৩ সালে শামীম রেজা আমাকে বলে, কাকা আপনি একটু বিষয়টি সমাধান করে দেন। আমি আহত রানার মা রিনা খাতুনের সাথে কথা বলি ও অনুরোধ করি।
পরবর্তীকালে রানার পিতার সাথে কথা বলেও মীমাংসা করতে ব্যর্থ হই। মামলা দীর্ঘ চার পাঁচ বছর চলার পরে রায়ে সকলেই নির্দোষ প্রমানিত হয়। হঠাৎ করে আজ মঙ্গলবার দুপুর আড়াই টার সময় বিএনপি নেতা মোঃ ময়নুল ইসলাম মোল্লা সাংবাদিক আকাশ'কে প্রকাশ্য লোকজনের মধ্যে শফিকুল ইসলাম এর চা স্টলে বলেন যে, তোর উপর আমার অভিযোগ আছে! আমার ভাতিজা শামীম মামলা খেয়েছে তোর কথায়। তোর মামলায় যাবতীয় খরচের টাকা দিতে হবে।তুই আওয়ামী লীগ, তোর আওয়ামী লীগের লোক মামলা করে শামীমের ও আমার অনেক টাকা লেগেছে। তুই মামলা মীমাংসা করে দিতে পারিসনি কেনো? কি বালের আওয়ামী লীগ করিস? সমস্ত ক্ষতি পূরন তোকে দিতে হবে।
সাংবাদিক আকাশ বারংবার ময়নুল ইসলামকে বোঝানোর চেষ্টা করে এবং তীব্র প্রতিবাদ করে। আকাশ বলেন, আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ সমর্থক হতেই পারি! আমিতো কোথাও কোন রুপ অন্যায় দোষ ত্রুটি করে থাকলে আমাকে আপনি বয়োজ্যেষ্ঠ হিসেবে শাসন করতে পারেন। তাই বলে আপনি আমাকে অন্যায় ভাবে দোষারোপ করতে ও হুমকি প্রদর্শন করতে পারেননা।
তখন উপস্থিত লোকজন ধীর স্থির ভাবে সকল বিষয় পর্যবেক্ষণ করেন তবে কেউ কোন প্রতিবাদ বা ন্যায় সঙ্গত কথা বলতে সাহস পাননি।