ঢাকা | বঙ্গাব্দ

‘ব্যাংকিং অ্যালমানাকে’ ঋণ অবলোপনের চিত্রও তুলে ধরা দরকার

  • আপলোড তারিখঃ 10-02-2024 ইং |
  • নিউজটি দেখেছেনঃ 300549 জন
‘ব্যাংকিং অ্যালমানাকে’ ঋণ অবলোপনের চিত্রও তুলে ধরা দরকার ছবির ক্যাপশন: সংগ্রহকৃত ছবি
LaraTemplate

‘ব্যাংকিং অ্যালমানাকে’ ঋণ অবলোপনের চিত্রও তুলে ধরা দরকার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

ব্যাংকিং খাত খুব ভালো অবস্থায় নেই, তা আমরা সবাই জানি। আন্তর্জাতিক ঋণমানে ব্যাংকিং খাত কিছুটা খারাপ হয়েছে। বর্তমানে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণে শুধু বিশ্বব্যাংক কিংবা আইএমএফের সার্টিফিকেটের ওপর ভিত্তি করে হয় না। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রেটিং এজেন্সির ওপর নির্ভর করতে হয়। সেই হিসেবে ‘ব্যাংকিং অ্যালমানাক’ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এতে খেলাপি ঋণের পাশাপাশি ঋণ অবলোপনের চিত্রও তুলে ধরা দরকার। এছাড়া ব্যাংকিংখাতের নীতি সংস্কারের ইনস্টিটিটিউশনাল মেমোরিগুলোকে সামনে রাখা উচিত।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্যভিত্তিক গবেষণাগ্রন্থ ‘ব্যাংকিং অ্যালমানাক’ গ্রন্থের ৫ম সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিব বক্তব্যে এসব কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ব্যাংকিং অ্যালমানাকের এডিটোরিয়াল বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং এসএ টিভির নিউজ এডিটর সালাউদ্দিন বাবলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, এক্সিম ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মো. আব্দুল বারি, অ্যাসোসিয়েশোন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান এবং ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন, লিগ্যাল ইকোনোমিস্ট এম এস সিদ্দিকী এবং ব্যাংকিং অ্যালমানাকের প্রকল্প পরিচালক আবদার রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. ওয়াহিদউদ্দিন আরো বলেন, ব্যাংকিং অ্যালমানাক গ্রন্থ প্রকাশ দেশের আর্থিক খাতের ওপর একটি ভালো উদ্যোগ। গত কয়েক বছর ধরে গ্রন্থটির ব্যাংক ও আর্থিক খাতের তথ্য সন্নিবেশন করে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। তবে আমি মনে করি- এমন প্রকাশনার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা এবং এর ব্যাপক প্রচার হওয়া দরকার। ব্যাপক প্রচার হলে যারা ব্যাংকার, যারা ব্যাংক নিয়ে কাজ করেন, গবেষক, বিনিয়োগকারী-আমানতকারী সবার জন্য বইটি সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরো বলেন, ব্যাংকিং খাত হচ্ছে একটি দেশের অর্থনীতির হৃদপিন্ডের মতো। ব্যাংকিং অ্যালমানাক এই হৃদপিন্ডের তথ্যমূলক গুরুত্বপূর্ণ উপস্থাপনা। ব্যাংকিং অ্যালমানাকে উপস্থাপিত তথ্যের আলোকে একজন ব্যাংকার, গবেষক, বিনিয়োগকারী, আমানতকারী জানতে পারবেন কোন ব্যাংকটির অবস্থা কেমন। সেই আলোকে তিনি ব্যাংকের সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। গ্রাহকের জন্য কোন ব্যাংকের কি সুবিধা আছে, শেয়ার কোন ব্যাংকের কেমন, আমানত কোথায় রাখলে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে এসব তথ্য একসাথে এই গ্রন্থটিতে পাওয়া যাবে। সে হিসেবে
বইটি তথ্য সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং অ্যালমানাক দেশের প্রথম এ ধরনের প্রকাশনার উদ্যোগ। আমরা প্রতি সংস্করণেই চেষ্টা করছি নতুন ও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য সংযোজন করতে। আমাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ ধরনের প্রকাশনার জন্য যে পরিমাণ ফান্ড প্রয়োজন সে সাপোর্ট পাওয়া যায় না। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি সর্বশেষ তথ্য দিয়ে প্রকাশনাটির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে। ব্যাংকগুলো আমাদেরকে যে তথ্য দিচ্ছে আমরা সেগুলোই সন্নিবেশন করে উপস্থাপন করছি। এতে অন্তত দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতের তুলনামূলক একটা চিত্র তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো সমৃদ্ধ তথ্য ভান্ডারে পরিণত করার প্রয়াস থাকবে।

এক্সিম ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মো. আব্দুল বারি বলেন, ব্যাংকিং অ্যালমানাক ব্যাংক ও আর্থিক খাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা। এর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই তথ্য ভাণ্ডার ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বময়। ব্যাংক অ্যালমানাকে ৫ম সংস্করণটি আরো তথ্যসমৃদ্ধ প্রকাশনা- যা বিনিয়োগকারী, গবেষক, ব্যাংকার, সাংবাদিক ও যারা ব্যাংক নিয়ে কাজ করেন তাদের জন্য রেফারেন্স বুক হিসেবে কাজ করবে।

মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, ব্যাংকিং অ্যালমানাক দেশের আর্থিক খাতের একটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রকাশনা। এবারের সংস্করণে ডিজিটাল ব্যাংকিং বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যা স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার সহায়ক। ব্যাংক ও আর্থিক খাত নিয়ে গবেষণার জন্য ব্যাংকিং অ্যালমানাক গুরুত্বপূর্ণ দলিল।

ব্যাংকিং অ্যালমানাকের প্রকল্প পরিচালক আবদার রহমান বলেন, আমরা নিরলস চেষ্টার মাধ্যমে প্রতিবছরের মতো এবার ৫ম সংস্করণটি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করতে পেরে ধন্য মনে করছি। ৫ বছর নিয়মিত প্রকাশের ধারাবাহিকতায় ব্যাংকিং অ্যালমানাক একটি স্বতন্ত্র ইনস্টিটিউশন হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেছে। সুধীমহল থেকে এই প্রকাশনার আবশ্যকতা এবং প্রকাশনা অব্যাহত রাখার পরামর্শ আসছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় শিক্ষাবিষয়ক সাপ্তাহিক পত্রিকা শিক্ষাবিচিত্রার উদ্যোগে ২০১৬ সাল থেকে এই গবেষণা গ্রন্থটি নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে আসছে। ব্যাংকিং অ্যালমানাকের গৌরবময় অভিযাত্রার ৫ বছর। প্রতিবছর একটি মোড়কে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলী, সেবা এবং কর্মদক্ষতা সূচকের সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত সর্বসাধারণের সম্মুখে তুলে ধরার এক নির্ভরযোগ্য প্রয়াস ব্যাংকিং অ্যালমানাক। গবেষক ও বিনিয়োগকারীদের জন্য গবেষণা গ্রন্থ ‘ব্যাংকিং অ্যালমানাক’ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং দেশি-বিদেশি গবেষণা সংস্থা এবং যারা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করেন তাদের জন্য এই ব্যাংকিং অ্যালমানাক খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা এ বইটিতে বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য একসঙ্গে পাবেন। যা তাদের বিনিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পেতে সহায়তা করবে। শুধু তাই নয় গ্রন্থটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট গভর্নেন্সের জবাবদিহিতার বিষয়টিকে আরো শক্তিশালী করবে।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ সাইফুল ইসলাম সানি

সর্বশেষ সংবাদ
notebook

কয়রার দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন