চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় এস. আলম রিফাইন্ড সুগার মিলের একটি গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে।
গত (০৫ মঙ্গলবার) এর তুলনায় বুধবার বস্তায় (৩৭.৩৩ কেজি) দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। একদিন আগে যে চিনির দাম ছিল ৪ হাজার ৯’শ থেকে ৯’শ ৫০টাকা। সেই চিনি আজ বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ৫ হাজার ৫০টাকা দরে।
তবে চিনির পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও এমন দাম বৃদ্ধি কারণ জানা যায়নি। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন: কেজি প্রতি চিনির দাম বেড়েছে ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন: এস আলমের কারখানা থেকে প্রতিদিন বাজারে ১ হাজার থেকে ১২শ’ মেট্রিক টন চিনি সরবরাহ করা হয়। যা দেশের মোট চাহিদার একটি বড় অংশ। সেই সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যত্যয় হলে দাম কিছুটা বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। তবে যে পরিমাণ চিনি আমদানি রয়েছে তাতে করে রমজানে দেশের বাজারে চিনির সঙ্কট হবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী: বার্ষিক ১৯ লাখ টানের চাহিদার বিপরীতে গত আট মাসে (২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) দেশে চিনি আমদানি হয়েছে ১৪ লাখ ১৮ হাজার ৬৩০ মেট্রিক টন। সেই হিসাবে গত আট মাসে গড়ে প্রতি মাসে চিনি আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৩২৮ মেট্রিক টন। তাই এস আলম সুগার রিফাইনারি লিমিটেডের গুদামে থাকা ১ লাখ টন চিনি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেবে না।
দেশে চিনির যে চাহিদা তার প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। সরকারি হিসাবে দেশে বর্তমানে চিনির বার্ষিক চাহিদা ১৯ লাখ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন। এর প্রায় ৯০ শতাংশই আমদানি করে মেঘনা সুগার রিফাইনারি লিমিটেড, সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ, দেশবন্ধু সুগার মিলস লিমিটেড ও আব্দুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেড। এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের কেউ বাজারে চিনির সরবরাহ কমিয়ে দিলেই বাজারে সংকট তৈরি হয়। তখন চিনির দামও বেড়ে যায়।
অন্যদিকে এস. আলম গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক আখতার হাসান জানিয়েছেন: আমরা যত দ্রুত সম্ভব রিফাইন মিলটির কার্যক্রম শুরুর জন্য চেষ্টা করছি। কারখানা চালু হলে চিনির গুদামে ঘটে যাওয়া এই অগ্নিকাণ্ডের দীর্ঘস্থায়ী কোন সংকট থাকবে না বলে আমরা মনে করি। আগুন লাগা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত পরিমাণে চিনি মজুত থাকায় বাজারে এর কোন প্রভাব পড়বে না বলে আশাবাদী এস. আলম গ্রুপ। অনেক অসাধু বিক্রেতা হয়তো এই পরিস্থিতিতে সুবিধা নিতে চাইবেন। তবে বাজারে সরবরাহের জন্য যথেষ্ট চিনি আমাদের কাছে মজুত রয়েছে। আগামী কয়েক দিনেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।