হোক সেটা নিজের ক্ষেত্রে বা পরের!
(১)
একবার এক ইঁদুর লক্ষ্য করল যে গৃহস্থের বাড়িতে ইঁদুর মারার ফাঁদ পাতা রয়েছে। সে খুবই ভয় পেল।
ফাঁদটি অকেজো করার জন্য সে ওই বাড়িতে থাকা মুরগির সাহায্য চাইল।
মুরগি ঘটনা শুনে জবাব দিল-
“ফাঁদটি আমার কোন ক্ষতি করতে পারবেনা।
অতএব, আমি এখানে কোন সাহায্য করতে পারবো না”।
মুরগির কাছ থেকে এই উত্তর শুনে ইঁদুর খুব দুঃখিত হল।
(২)
ইঁদুর পরবর্তীতে গৃহস্থের ছাগলের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইল। ছাগল ফাঁদের কথা শুনে বলল-
“ওই ফাঁদ বড়দের জন্য নয়। আমি এখানে তোমাকে কোন সাহায্য করতে পারবনা”।
ইঁদুর ছাগলের কাছ থেকে একই উত্তর শুনে দুঃখিত হলো।
(৩)
ইঁদুর পরবর্তী কালে গৃহস্থের গরুর কাছে গেলো। সব কথা শুনে গরু বলল- “ইদুরের ফাঁদ আমার মত বড় প্রাণীর
কোন ক্ষতিই করতে পারবেনা। যা আমার কোন ক্ষতি
করতে পারবেনা- তাতে আমি সাহায্য করতে পারবনা”।
(৪)
ইঁদুর শেষ পর্যন্ত নিরাশ হয়ে তার ঘরে ফিরে এসে হতাশা চিত্তে ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত হয়ে পড়লো।
রাতের বেলা বাড়ির কর্ত্রী অন্ধকারের ভিতর বুঝতে পারলেন যে ফাঁদে কিছু একটা ধরা পরেছে।
অন্ধকারে ফাঁদের কাছে হাত দিতেই উনি হাতে কামড় খেলেন এবং দেখলেন গৃহকর্তার ফাঁদে ইঁদুরের বদলে সাপ ধরা পড়েছে।
তার চিৎকারে গৃহকর্তার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। তাড়াতাড়ি ডাক্তার ডেকে আনলেন। চিকিৎসা শুরু হয়ে গেল। কিন্তু অবস্থা মোটেই ভালো না। পথ্য হিসেবে ডাক্তার মুরগির স্যূপ খাওয়াতে বললেন। স্যূপের জন্য কর্তা মুরগিকে জবাই করে দিলেন। অবস্থা আস্তে আস্তে আরও খারাপ হতে লাগলো। দূরদূরান্ত থেকে আরও অনেকে আত্মীয় স্বজন আসতে লাগলো। বাধ্য হয়ে কর্তা ছাগলকে জবাই করলেন মেহমানদের আপ্যায়ন করার জন্য।
আরও ভালো চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার হতে লাগলো। অবশেষে, বাড়ির কর্তা তার গরুটিকে কসাইখানায় বিক্রি করে দিলেন। এক সময় বাড়ির কর্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠল। আর এই সমস্ত ঘটনা ইঁদুরটি তার ছোট্ট ঘর থেকে পর্যবেক্ষণ করলো ও ভাবতে লাগলো!
উপদেশঃ কেউ বিপদে সাহায্য চাইলে তাকে সাহায্য করা সকলের উচিৎ, হোক সেই বিপদ আপনাকে স্পর্শ করুক বা না করুক। বিপদগ্রস্থকে সাহায্য করা মানুষের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য......
(ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)
🎤✒️এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ
কবি-সাংবাদিক ও গীতিকার,
চলনবিল,পাবনা।