মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ও উপকূলীয় অঞ্চলে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘরাশি সৃষ্টি হয়েছে এর প্রভাবে খুলনায় অবিরাম বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বইছে।
তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন সড়কে হাঁটুপানি জমেছে। যার ফলে বিভিন্ন সড়কে চলাচলের সময় আটকা পড়ছে যানবাহন বৈরী আবহাওয়ার কারণেই স্থবিরতা বিরাজ করছে জনজীবনে।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাচ্ছে না অনেকেই টানা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা।
টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণের ফলে খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, খুলনা মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ খুলনা নগরীর বয়রা ও সোনাডাঙ্গা এলাকার এক নাম্বার আবাসিক এলাকাসহ বেশ কয়েকটি সড়ক, বসতবাড়ি, মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট এবং বসতবাড়ির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এদিকে গত শানিবার থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণে পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। সোমবার সকালে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
সরজমিন এলাকা ঘুরে দেখতে পাই খুলনা সরকারি টিসার্চ ট্রেনিং কলেজ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ইনস্টিটিউটে প্রবেশের রাস্তা এবং খেলার মাঠ পানিতে থৈ থৈ করছে।
বয়রা এলাকায় রোডের ধারে কয়েকজনকে জাল ফেলে মাছ ধরতে দেখা যায়। রাস্তার উপর হাঁটু সমান পানি জমে থাকায় বয়স্ক নারী-পুরুষ, মহিলা, শিশুসহ সাধারণ পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চাসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে আছে বসতবাড়িতে পানি জমে যাওয়া পরিবারগুলো।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, এলাকার পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু কোন ব্যবস্থা না থাকায়, পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায়, ড্রেনের ভেতর ময়লা আবর্জনা জমে থাকার কারণে প্রতি মৌসুমী বৃষ্টির পানি সরতে না পারার কারণে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গত পাঁচ বছর ধরে এই দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে।
একটু ভারী বৃষ্টি হলেই এলাকার রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, পুকুর, মাছের ঘের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব পানিতে তলিয়ে যায় এলাকাবাসীর এই দুর্ভোগ নিরসনে কোন মন্ত্রী-এমপি, সিটি কর্পোরেশন কিংবা কোন জনপ্রতিনিধি এ পর্যন্ত কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
এলাকাবাসী আরো জানান, এ বছর আমাদের গোবর চাকা এলাকায় পানি সরতে না পারার কারণে গত ৩ দিনের ভারী বর্ষণে আমাদের এ এলাকায় অতিরিক্ত পানি জমে আছে বৃষ্টি থামার পরেও বেশ সময় লাগবে এই পানি সরতে।
৩ দিনের টানা বৃষ্টিতে খুলনার শিক্ষা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পানিতে থৈ থৈ করছে একই অবস্থা খুলনা সরকারি টিসার্চ ট্রেনিং কলেজ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ইনস্টিটিউটে প্রবেশের রাস্তা এবং খেলার মাঠের। গভঃ ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের খেলার মাঠে হাঁটু সমান পানি জমে আছে। এছাড়া মুজমুন্নী, সহ বেশ কিছু এলাকায় পানি জমে আছে।
জানা যায়, খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) এলাকার মধ্যে সড়ক আছে প্রায় এক হাজার ২১৫টি, যার অধিকাংশই বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে।
কেসিসি জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় গত ছয় বছরে ১০৪টি ড্রেন পুনঃনির্মাণ করেছে ময়ূর নদসহ সাতটি খাল পুনরায় খনন ও ৩২টি ড্রেনের সংস্কার চলছে। এতে ব্যয় প্রায় ৫০২ কোটি টাকা। এ বিপুল অর্থ ব্যয়ের পরও নগরের জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।