প্রিন্ট এর তারিখঃ Apr 20, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Apr 20, 2025 ইং
মনপুরা হাসপাতালে বেড়েছে সেবার মান, রয়েছে জনবল সংকট

ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদনের কথা থাকলেও ৩১ শয্যার কার্যক্রম চলমান। ৩১ শয্যার উপজেলার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক থাকার কথা রয়েছে ১০ জন। কিন্তু আছে মাত্র ০৪ জন। অথচ বিশাল জনগোষ্ঠীর এ উপজেলার হাসপাতালটিতে দিনদিন রোগীর চাপ বাড়ছেই। সঠিক চিকিৎসা আর সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মনপুরা হাসপাতালে বিগত কয়েক মাসে রোগীর সেবা আশানুরূপভাবে বেড়েছে। ডাক্তার উপস্থিতি, বিনামূল্যে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষা ও ফ্রি ঔষধ সরবরাহের মাধ্যমে রোগীদের আস্থা অর্জন করেছে সরকারি এই হাসপাতাল। দালাল ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্মও কমেছে আগের চেয়ে। নিয়মিত পরিচ্ছন্ন অভিযানের ফলে আগের মতো নোংরা ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ আর নেই। অনেকটা ঝকঝকে তকতকে মনপুরা হাসপাতাল। বিগত দিনের চেয়ে এই হাসপাতালের চিত্র এখন অনেক পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি। এর ফলে সরকারি এ হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর সেবা। দালাল চক্রের দৌড়াত্ম কমায় তারা এখন বিভিন্ন কৌশলে সরকারি ৩১ শয্যার একমাত্র এ হাসপাতালের বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে ডাক্তার এবং হাসপাতালের দুর্নাম ছড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন সচেতন মহল।
অন্যদিকে নার্স ৩০ জন থাকার কথা থাকলেও আছেন আটজন। এছাড়া টেকনিশিয়ান, ওয়াড বয়, আয়াসহ তৃতীয় শ্রেণীর ৬১ পদের মধ্যে ৪১টি পদ শূন্য। যার জন্য অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে।
জানা গেছে, গত ২০২২ সালের মাঝামাঝিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও হাসপাতালের প্রধান হিসেবে যোগদেন ডাক্তার মোঃ সোহেল কবির। তিনি যোগদানের পর থেকে হাসপাতালের চিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছে। এছাড়াও নিজস্ব তহবিল থেকে সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ রোগীর বিছানার জন্য ফোম ও বেডশিট প্রদান করা ইত্যাদি সহ নানান উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হাসপাতালের পরিবেশ ও চিকিৎসা সেবার আমুল পরিবর্তন আনতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এরপরই পাল্টে যেতে শুরু করে মনপুরার একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিত্র।
মনপুরা হাসপাতাল সূত্র জানায়,মনপুরা হাসপাতালে দৈনিক আউটডোর রোগী গড়ে ১৮০ জন। ছুটির দিন ছাড়া ইনডোর এবং আউটডোরে গড়ে ২৫০-৩০০ জন রোগী নিয়মিত চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন বলেও জানান। হাসপাতালের সবচেয়ে বড় সাফল্য সিজার ডেলিভারি নিরোৎসাহিত করে বিগত ৫ মাসে গড়ে ১০০ জনের অধিক বিনামূল্যে সফলভাবে নরমাল ডেলিভারি করা হয়েছে।
এছাড়াও দালাল এবং চাঁদাবাজের দৌড়াত্ম কমে যাওয়ায় তারা পরিকল্পিতভাবে মনপুরা উপজেলা হাসপাতালের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা:কবির সোহেল জানান, সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা মনপুরাবাসিকে সরকারি সেবা পৌঁছে দিতে চেষ্টা করছি। বিভিন্ন পরীক্ষা ও ঔষধ আমরা ফ্রি সরবরাহ করছি। এতে জনগন উপকৃত হচ্ছে। তবে জনবল সংকটের বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ স্বাধীন ৭১ | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ