এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ, পাবনা জেলা প্রতিনিধি:।।
জামান কিছুদিন অবস্থান করে বাড়ী ফিরে এসে 🕸সোহানা কে চিঠি লেখে তার মানসিকতা পরিহার করার জন্য যথারীতি মুঠোফোনে কথা বার্তাও চলতে।
থাকে! কথাবার্তা বলতে বলতে সোহানার মায়ের সাথেও কথা হয় জামানের।
সোহানার ভাইয়ের সাথেও সৌজন্যতায় কথা বলে মাঝে মধ্যেই জামান।
জামানের পিতার সাথে জামানের খুবই বন্ধু বৎসল সম্পর্ক থাকায় ফ্রেন্ডলী কথা হতো তাদের মাঝে।
দিন গড়াতে থাকে একদিন গল্পে গল্পে জামানের পিতা জামানকে বলেন যে, বটিয়াঘাটা এলাকার একজন কুখ্যাত রাজাকার সম্পর্কে তখন সোহানার পিতার নামের সাথে মিলে যাওয়ায় জামান হতচকিত হয়ে পড়ে।
মাঝে জামানের পিতার ঔরসজাত অপর পুত্র মামল খেলে পালিয়ে বেড়াতে থাকে তখন জামান বিষয়টি সোহানাকে খুলে বললে সোহানা জামানের অনুজকে আশ্রয় দেয়।
কিন্তু জামান তা কৃতজ্ঞতার নিরিখে মনে না রেখে রাজাকারের সন্তান হওয়ার দোষে সোহানাকে কৌশলেধীরে ধীরে এড়িয়ে যায়।
সোহানার মায়ের আঁচল পেতে চাওয়া বিশ্বাসের মুল্যটুকুও রাখেনি দেয়নি কথিত দেশপ্রেমিক জামান! তিলে তিলে বুকের গহীনে সঞ্চিত ভালোবাসাটুকুও।
বিসর্জন দিয়েছে দেশপ্রেম ও মুক্তির চেতনার দোহাই দিয়ে।
সোহানার হৃদয়ের অতল গহ্বরে জমা ভালোবাসা বিশ্বাসকে নিমেষেই হত্যা করেছে জামান। তবুও জামান কদাচিত অনুতপ্ত ও ব্যথিত হয়নি প্রকাশ্যে লোক চক্ষুর সম্মুখে।
ভালোবাসার প্রতি বিশ্বাসকে হত্যা করেছে জামান।
সোহানা জামানকে হাজারও বার প্রতীক্ষার প্রহরে অপেক্ষমান থেকে ডেকেছে।
হাজার বার অনুরোধ করেছে পারিবারিক ভাবে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়ার তরে আরো বলেছে তোমার জন্য অনাদিকাল প্রতীক্ষা করতে পারি যদি তুমি সামাজিক স্বীকৃতি দাও।
হয়তো সোহানার চোখের নোনা জলের মুল্য জামান অনুধাবনের চেষ্টা করেনি সোহানা অবলা নারী, পুরুষ তান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় নিঃরবে কেঁদেছে, পরিবারের চাপের মুখে হয়তো কোথাও তাদের পছন্দের কাউকে বিয়েও করতে হয়েছে! জামান দেশপ্রেমের চেতনায়, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসতে পারেনি সোহানাকে।
আজও সে মুক্তির চেতনা, দেশপ্রেমের বুলি নিয়েই একাকীত্বের বেদনায় ভারাক্রান্ত মনে নিঃস্বরে কালাতিপাত করছে হয়তো সোহানা বা সোহানাদের কথা মনে করে দীর্ঘশ্বাস ফেলছে জীবন সায়াহ্নে! হয়তো সোহানার এখন আর মনে পড়েনা জামান কে! হয়তো সংসার করতে গিয়ে কোন দিনও ভুল করেও মনে পড়েনা জামানের কথা।
সোহানা জামানকে ভালোবাসলেও নিরুপায় ছিলো। অপেক্ষা বা প্রতীক্ষা করা ছাড়া সোহানার কিছুই করার ছিলো না।
কিন্তু জামান পুরুষ তান্ত্রিক সমাজের সবল পুরুষ হয়েও হাত গুটিয়ে ছিলো মুক্তির চেতনা ও দেশপ্রেমের দোহাই দিয়ে। জামান নিঃশব্দে পথ চলে, নিস্তেজ জীবন যাপন করে, ধুঁকে ধুঁকে পার করছে জীবনের প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্ত! কালে কালে জামানদের সাথে এমনই হওয়া উচিত।
✒️লেখকঃ
প্রভাষক এস এম মনিরুজ্জামান আকাশ
কবি-কলামিস্ট, সাংবাদিক-গবেষক,
পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী,
সভাপতি-
গ্রিনপিস বাংলা, পাবনা জেলা শাখা, পাবনা।