আদর বড়ুয়া (চট্টগ্রাম) পটিয়া উপজেলা প্রতিনিধি:।।
চট্টগ্রামের পটিয়ায় যৌতুকের চাপ সহ্য করতে না পেরে মেহেদী অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা আগে তরুণীর আত্মহত্যা ঘটনায় হবু স্বামী মিজানুর রহমান মোরশেদকে (৩০) পটিয়া থানা পুলিশ অবশেষে গ্রেফতার করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাতে সিলেট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্ত মিজানুর উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মফিজুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ জানান, ব্যাংকার মিজানুর রহমানের সঙ্গে একই এলাকার কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী রীমা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক হয়। উভয় পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নিলেও হবু স্বামীর যৌতুকের চাপ সহ্য করতে না পেরে মেহেদী অনুষ্ঠানের দিন গত ২৭ জুন রাতে তরুণী ঘরের দরজা বন্ধ করে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। তরুণী মৃত্যুর আগে একটি সুই সাইড নোটও লিখে যান। এতে যৌতুকের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে লেখা ছিল।
চিরকুটে রীমা লিখেন, ‘প্রিয় শখের পুরুষ, তুমি করো তোমার বিয়ে। অনেক ভালোবেসেছ এবং অতিরিক্ত যন্ত্রণাও দিয়েছ। আমি পারছি না এত যন্ত্রণা নিতে। বাকি জীবনটা সুন্দর করে উপভোগ করতে পারলাম না। ভালো থেকো। আজকের দিনেও তোমার যন্ত্রণা নিতে পারছি না। আমার পরিবার থেকে যে যৌতুকের টাকা তোমাদের দিয়েছে, সেগুলো শোধ করে দিও। তুমি আমাকে বাঁচতে দিলে না।
তিনি আরও লিখেন, ‘আমি বাঁচতে পারতাম যদি আমি বেশি মানসম্মানওয়ালা পরিবারের জন্মগ্রহণ না করতাম। সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিও। আর আমার পোস্টমর্টেম করিয়ে আমার সব যন্ত্রণা ধুয়ে মুছে আমাকে কবরে পাঠিও। আর আমার পরিবারকে বলছি, মোরশেদকে তোমরা ছাড়বা না। ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি তোমরা দেবা।
পটিয়া থানার ওসি জসিম উদ্দিন জানান, যৌতুকের চাপ সহ্য করতে না পেরে মেহেদী অনুষ্ঠানের দিন রাতে তরুণী আত্মহত্যা করার ঘটনায় থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
ঘটনার পর হবু স্বামী পলাতক থাকলেও অবশেষে গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে প্রেরণ করা হবে।