প্রিন্ট এর তারিখঃ May 24, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ May 24, 2025 ইং
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে উত্তাল কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষুব্ধ কিশোরগঞ্জবাসী। জেলার একমাত্র সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতে সেবার বদলে এখন হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগীরা। ভুল চিকিৎসা, রোগী স্থানান্তরের নামে বাণিজ্য এবং রাজনৈতিক সংযোগের অপব্যবহারের অভিযোগে চিকিৎসা সেবায় নেমেছে স্থবিরতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই হেলিশ রঞ্জন সরকার রোগীদের সরকারি সেবার বাইরে পাঠিয়ে দেন বেসরকারি প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ ও দীন মোহাম্মদ হাসপাতালে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকা এই চিকিৎসক বর্তমানে বিএনপি-জামায়াতপন্থীদের সাথেও সখ্যতা গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
একাধিক ঠিকাদার জানিয়েছেন, সদ্য ঘোষিত একটি দরপত্র বিজ্ঞপ্তিতে পিপিআর এর নিয়ম না মেনে বাড়তি অভিজ্ঞতা ও আর্থিক সক্ষমতা চাওয়া হয়েছে, যা একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার কৌশল বলে মনে করছেন তারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেখানে পিপিআর অনুযায়ী ৩ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেই দরপত্রে অংশগ্রহণ করা যায়, সেখানে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া এবং ২৫০ বেডের বেশি হাসপাতালের অভিজ্ঞতার শর্ত আরোপ সম্পূর্ণ বেআইনি।
তাদের দাবি, ডা. হেলিশ ও হাসপাতালের প্রধান হিসাবরক্ষক আকরাম (ওরফে একরাম) মিলে ঠিকাদারি সিন্ডিকেট গঠন করে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করছেন। অভিযোগ রয়েছে, তারা রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় গিয়ে গোপনে ঠিকাদারদের সাথে বৈঠক করে দরপত্র ভাগাভাগি করছেন। এছাড়া হাসপাতালের গ্যাস সিলিন্ডার চুরির ঘটনাও ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।
সেবার নামে হয়রানি, রাজনৈতিক আনুগত্য, এবং দুর্নীতির এমন চিত্রে সাধারণ মানুষ আশঙ্কায় ভুগছেন। অনেকেই মনে করছেন, এই অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সরকারকেই বিব্রত করার পাঁয়তারা চলছে।
এ বিষয়ে ডা. হেলিশ রঞ্জনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। একইভাবে প্রধান হিসাবরক্ষক আকরামের সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এই বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন জেলার সচেতন নাগরিক সমাজ।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ স্বাধীন ৭১ | আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ