তখনো কোনো খনিজ পদার্থ আবিষ্কার হয়নি। শিকারের প্রয়োজনে মানুষ হাতিয়ার তৈরি করত পাথর দিয়ে। তাই এই যুগের নাম প্রস্তর যুগ।
শিকার ও খাদ্য সংগ্রহ, কৃষি সম্প্রসারণ ও ধাতু আবিষ্কারের প্রয়োজনিয়তা দেখা দিল, এই সবগুলো নেয়ামতের নিদর্শন বর্তমান ফিলি-স্তিন(তখনো ফিলি-স্তিন নাম হয়নি)নামক স্থানে পাওয়া গেছে। এমনই প্রাচীন ও সমৃদ্ধ এ অঞ্চলে বছর জুড়ে বৃষ্টি হয়। সারা বছর তাপমাত্রা থাকে স্বাভাবিক। শীত কিংবা গ্রীষ্ম সবসময়ই তাপমাত্রা থাকে ১৯-২৭ ডিগ্রির মধ্যে। ফিলি-স্তিন হল এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের মিলনস্থল।
ফিলি-স্তিন নামকরণ:
প্রাচীনকালে খৃষ্টপূর্ব ৩২০০ সালে মানুষ ব্রোঞ্জ যুগে প্রবেশ করে। এসময় মানুষ টিন আবিষ্কার করে।ব্রোঞ্জযুগে কেনআনীরা এসে ফিলি-স্তিনে বসবাস শুরু করে। কেনআনীদের একটি শাখা হল, ফিনিশিয়ান সম্প্রদায়। তারা সিরিয়ার নিকটবর্তী ফিলি-স্তিনী এলাকায় বসবাস করত।
ফিলি-স্তিনে বসবাসকারী আরেকটি সম্প্রদায়ের নাম আমোরীয়।তাদের থেকেই এসেছে হেকসোস সম্প্রদায়। আলকুদসের গোড়াপত্তন তাদের অন্যতম কীর্তি। তারা এ শহরের নাম দিয়েছিল, উরসালিম।
এ যুগের কয়েক শ বছর পর ফিলি-স্তিনে প্রবেশ করে ব্লেস্ট জনগোষ্ঠী। তারা এসেছিল ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ ক্রিট থেকে। এরাও ইহুদী ছিল না। তারা এ অঞ্চলের নাম রেখেছিল বালিস্তিন। সেখান থেকেই পরিবর্তন হয়ে ফিলি-স্তিন হয়েছে।
তথ্যসূত্র:কিসসাতু ফিলি-স্তিন, রাগিব সারজানি; আক-সা কে আঁসু, আবু লুবাবা শাহ মানসূর; আলজাজিরা, উইকিপিডিয়া ও অন্যান্য।
মুল আলোচনা:
আল-কুদস, মসজি-দুল আকসা বা বায়তুল মাক-দিস কিংবা বাইতুল মুকা-দ্দাস। পৃথিবীর বরকতময় ও স্মৃতিবিজড়িত ফিলি-স্তিনের সুন্দর সুশোভিত প্রাচীনতম জেরুজালেম শহরে অবস্থিত মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ।
আমাদের বর্তমান প্রজন্মের একটি বড় অংশ মসজিদে আক-সার পরিচয়, মর্যাদা ও মাহাত্ম্য সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণাও রাখে না।
তাই সংক্ষিপ্তাকারে মসজিদে আক-সার পরিচয় ও মর্যাদা আপনাদের সামনে পেশ করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
এক.
ফিলি-স্তিন কুরআনে স্বীকৃত পবিত্র ভূমি
یٰقَوۡمِ ادۡخُلُوا الۡاَرۡضَ الۡمُقَدَّسَۃَ الَّتِیۡ کَتَبَ اللّٰہُ لَکُمۡ وَلَا تَرۡتَدُّوۡا عَلٰۤی اَدۡبَارِکُمۡ فَتَنۡقَلِبُوۡا خٰسِرِیۡنَ
হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ তোমাদের জন্য যেই পবিত্র ভূমি নির্দিষ্ট করেছেন, ২২ তাতে প্রবেশ কর এবং নিজেদের পশ্চাদ্দিকে ফিরে যেয়ো না; তা হলে তোমরা উল্টে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
আল মায়িদাহ - ২১
দুই.
নবী-রাসুলদের স্মৃতির স্মারক
অনেক নবী-রাসুল এমন ছিলেন, যারা ভিন্ন অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেছেন, পরবর্তীতে আল্লাহর আদেশে এই মসজিদের জনপদে হিজরত করেছেন। সেই হিসেবে এই অঞ্চলটিকে নবী-রাসুলদের স্মৃতির স্মারক বলা যায়।
শুধু তাই নয়, মসজিদুল আক-সার আশেপাশে নবী-রাসুলদের যত কবর আছে, অন্য কোনো অঞ্চলে এত কবর পাওয়া যায় না।
ইবরাহীম ও লুত আ. এর হিজরতের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, وَنَجَّیۡنَـٰهُ وَلُوطًا إِلَى ٱلۡأَرۡضِ ٱلَّتِی بَـٰرَكۡنَا فِیهَا لِلۡعَـٰلَمِینَ এবং আমি তাকে (ইবরাহীম) ও লুতকে উদ্ধার করে এমন এক ভূমিতে নিয়ে গেলাম, যেখানে আমি সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য বরকত রেখেছি ।
(সুরা আম্বিয়া: ৭১)
তিন.
বরকতপূর্ণ ভূমি
মসজিদে আক-সার একটি বিশেষ ফযীলত হল, আল্লাহ একে বরকতময় করেছেন। এই মসজিদকে কেন্দ্র করে আশপাশের জনপদকেও বরকতপূর্ণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
سُبۡحٰنَ الَّذِیۡۤ اَسۡرٰی بِعَبۡدِہٖ لَیۡلًا مِّنَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ اِلَی الۡمَسۡجِدِ الۡاَقۡصَا الَّذِیۡ بٰرَکۡنَا حَوۡلَہٗ لِنُرِیَہٗ مِنۡ اٰیٰتِنَا ؕ اِنَّہٗ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡبَصِیۡرُ
পবিত্র সেই সত্তা, যিনি নিজ বান্দাকে রাতারাতি মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসায় নিয়ে যান, যার চারপাশকে আমি বরকতময় করেছি, তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখানোর জন্য। নিশ্চয়ই তিনি সব কিছুর শ্রোতা, সব কিছুর জ্ঞাতা। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ১
আল্লাহ আরো ইরশাদ করেন
وَجَعَلۡنَا بَیۡنَہُمۡ وَبَیۡنَ الۡقُرَی الَّتِیۡ بٰرَکۡنَا فِیۡہَا قُرًی ظَاہِرَۃً
আমি ওদের এবং যে জনপদগুলোতে বরকত রেখেছি, তার মাঝে এমন সব জনপদ স্থাপন করেছিলাম, যা নজরে আসত..। সূরা সাবা (৩৪) : ১৮
ইবনে আব্বাস রা. বলেন, এখানে বরকতময় জনপদ দ্বারা উদ্দেশ্য হল বাইতুল মাকদিসের জনপদ। তাফসীরে ইবনে কাসীর, খ. ৬, পৃ. ৪৬৮
চার.
দ্বিতীয় প্রাচীনতম মসজিদ
মসজিদে আকসার একটি বড় পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য হল, এটি পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয় প্রাচীন মসজিদ। মসজিদে হারামের পরেই এই মসজিদের বুনিয়াদ স্থাপিত হয়েছে।
عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ أَيُّ مَسْجِدٍ وُضِعَ فِي الأَرْضِ أَوَّلُ؟ قَالَ: الْمَسْجِدُ الْحَرَامُ. قُلْتُ: ثُمَّ أَيٌّ قَالَ: الْمَسْجِدُ الأَقْصى. قُلْتُ: كَمْ بَيْنَهُمَا؟ قَالَ: أَرْبَعُونَ سَنَةً
আবু যর রা. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! পৃথিবীতে সর্বপ্রথম কোন্ মসজিদ স্থাপিত হয়েছে? তিনি বললেন, মসজিদে হারাম। আমি বললাম, অতঃপর কোন্ মসজিদ? তিনি বললেন, মসজিদে আকসা। বললাম, এই দুইয়ের নির্মাণের মাঝে কত সময়ের ব্যবধান? তিনি বললেন, চল্লিশ বছর।
সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৩৬৬
সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫২০
পাচ.
তৃতীয় মর্যাদাপূর্ণ মসজিদ
ইসলামের দৃষ্টিতে সবচে মর্যাদাপূর্ণ মসজিদ হল মসজিদে হারাম, যা পবিত্র মক্কা নগরীতে অবস্থিত। দ্বিতীয় মর্যাদাপূর্ণ মসজিদ হল মসজিদে নববী, যা মদীনা মুনাওয়ারায় অবস্থিত। এই দুই মসজিদের পরেই তৃতীয় পবিত্রতম ও শ্রেষ্ঠতম মসজিদ হল মসজিদে আকসা, যা ফিলিস্তিনের জেরুজালেম নগরীতে অবস্থিত। এ কারণেই রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন―
لاَ تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلَّا إِلَى ثَلاَثَةِ مَسَاجِدَ: المَسْجِدِ الحَرَامِ، وَمَسْجِدِ الرَّسُولِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَمَسْجِدِ الأَقْصَى
সফর করলে তিনটি মসজিদের উদ্দেশ্যে সফর করা উচিত। মসজিদে হারাম, মসজিদে নববী, এবং মসজিদে আকসা।
সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৮৯
সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৯৭
এই হাদীস প্রমাণ করে মসজিদে হারাম, মসজিদে নববীর পরেই মর্যাদার দিক থেকে মসজিদে আকসার অবস্থান।
ছয়.
মুসলিমদের একসময়ের কেবলা
মসজিদে আকসার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল এটি মুসলিম উম্মাহর একসময়ের কেবলা।
ইবনে আব্বাস রা. বলেন-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي وَهُوَ بِمَكَّةَ نَحْوَ بَيْتِ الْمَقْدِسِ، وَالْكَعْبَةُ بَيْنَ يَدَيْهِ، وَبَعْدَ مَا هَاجَرَ إِلَى الْمَدِينَةِ سِتَّةَ عَشَرَ شَهْرًا، ثُمَّ صُرِفَ إِلَى الْكَعْبَةِ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় কা‘বাকে সামনে রেখে বাইতুল মাকদিসের দিকে ফিরে নামায আদায় করতেন। মদীনায় হিজরতের পরও ষোলো মাস বাইতুল মাকদিসের দিকে ফিরেই নামায আদায় করেছেন। অতঃপর কেবলা কা‘বার দিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৯৯১
মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ১৯৬৭
সাত.
ইসরা ও মেরাজের স্মৃতি বিজড়িত মসজিদ
মসজিদে আক-সার গুরুত্ব বোঝার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, মেরাজ রজনীতে আমাদের নবীজী ঊর্ধ্বজগতের সফর শুরু করার পূর্বে জিবরীল আমীনের সাথে প্রথমে এই মসজিদে এসেছেন এবং নামায আদায় করেছেন। তিনি ইমামতি করেছেন আর সমস্ত নবীগণ তাঁর ইকতিদা করেছেন।
আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বাইতুল মাক-দিসের বিবরণ দিতে গিয়ে) বলেন-
وقَدْ رَأَيْتُنِي فِي جَمَاعَةٍ مِنَ الأَنْبِيَاءِ فَإِذَا مُوسَى قَائِمٌ يُصَلِّي، فَإِذَا رَجُلٌ ضَرْبٌ جَعْدٌ كَأَنَّه مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ، وَإِذَا عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ -عَلَيْهِ السَّلاَمُ- قَائِمٌ يُصَلِّي، أَقْرَبُ النَّاسِ بِه شَبَهًا عُرْوَةُ بْنُ مَسْعُودٍ الثَّقَفِيُّ، وَإِذَا إِبْرَاهِيمُ -عَلَيْهِ السَّلاَمُ- قَائِمٌ يُصَلِّي، أَشْبَهُ النَّاسِ بِه صَاحِبُكُمْ -يَعْنِي نَفْسَه- فَحَانَتِ الصَّلاَةُ فَأَمَمْتُهُمْ
আর আমি নিজেকে আম্বিয়া আলাইহিস সালামের জামাতের মধ্যে দেখতে পেলাম। দেখি, হযরত মূসা আ. নামাযরত আছেন। তিনি ছিলেন ছিপছিপে ও দীর্ঘ দেহের অধিকারী। তাঁর চুল কোঁকড়ানো, যা ছিল কান পর্যন্ত ঝুলন্ত।দেখে মনে হবে, যেন ‘শানওয়া’ গোত্রেরই একজন লোক। হযরত ঈসা আ.-কেও নামাযে দণ্ডায়মান দেখা গেল। তাঁর আকার আকৃতি সাহাবী উরওয়া ইবনে মাসউদ সাকাফী রা.-এর সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। হযরত ইবরাহীম আ.-কেও নামাযরত অবস্থায় দৃষ্টিগোচর হল। নবীজী বলেন, তাঁর দেহাবয়বের সাথে আমার দেহাবয়বের মিল বেশি। ইতিমধ্যে নামাযের সময় হয়ে গেল আর আমি তাঁদের সকলের ইমামতি করলাম।
সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭২
একটি দীর্ঘ হাদীসের বর্ণনায় হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন―
ثُمَّ دَخَلْتُ بَيْتَ الْمَقْدِسِ فَجُمِعَ لِيَ الأَنْبِيَاءُ عَلَيْهِمُ السَّلاَمُ فَقَدَّمَنِي جِبْرِيلُ حَتى أَمَمْتُهُمْ
অতঃপর আমি বাইতুল মাকদিসে প্রবেশ করলাম। সমস্ত নবীদেরকে একত্রিত করা হল। জিবরীল আমাকে সামনে এগিয়ে দিলেন আর আমি তাঁদের ইমামতি করলাম।
সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৪৯
আট.
মসজিদে আক-সায় নামাযের সওয়াব
মসজিদে হারাম, মসজিদে নববীর পাশাপাশি মসজিদে আকসায় নামায পড়ার সওয়াবও অন্যান্য মসজিদের তুলনায় অনেক গুণ বেশি।
হযরত আবুদ দারদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন
الصَّلَاةُ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ بِمِائَةِ أَلْفِ صَلَاةٍ وَالصَّلَاةُ فِي مَسْجِدِي بِأَلْفِ صَلَاةٍ وَالصَّلَاةُ فِي بَيْتِ الْمَقْدِسِ بِخَمْسِمِائَةِ صَلَاةٍ
মসজিদে হারামের নামায এক লক্ষ নামাযের সমতুল্য। আমার মসজিদে (মসজিদে নববীতে) নামায এক হাজার নামাযের সমতুল্য। আর বাইতুল মাকদিসের নামায পাঁচ শ নামাযের সমতুল্য।
শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৩৮৪৫
নয়.
যিয়ারতকারীর জন্য বিশেষ দুআ
মসজিদে আকসার একটি বড় ফযীলত হল, হযরত সুলাইমান আ. এই মসজিদ যিয়ারতকারীর জন্য একটি বিশেষ দুআ করেছিলেন। আর স্বয়ং আমাদের নবী এই দুআ কবুল হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
لَمَّا فَرَغَ سُلَيْمَانُ بْنُ دَاودَ مِنْ بِنَاءِ بَيْتِ الْمَقْدِسِ سَأَلَ اللهَ ثَلاَثًا: حُكْمًا يُصَادِفُ حُكْمَه، وَمُلْكًا لاَ يَنْبَغِي لأَحَدٍ مِنْ بَعْدِه، وَأَلاَّ يَأْتِيَ هَذَا الْمَسْجِدَ أَحَدٌ، لاَ يُرِيدُ إِلاَّ الصَّلاَةَ فِيهِ، إِلاَّ خَرَجَ مِنْ ذُنُوبِه كَيَوْم وَلَدَتْهُ أُمُّه
সুলাইমান ইবনে দাউদ আ. যখন বাইতুল মাকদিস নির্মাণ থেকে ফারেগ হলেন, আল্লাহর কাছে তিনটি দুআ করলেন,
১. তাঁর প্রতিটি ফায়সালা যেন আল্লাহর ফায়সালা মোতাবেক হয়।
২. তাকে যেন এত বড় রাজত্ব দেওয়া হয়, যা তাঁর পরে আর কাউকে দেওয়া হবে না।
৩. একমাত্র নামাযের উদ্দেশ্যে যে ব্যক্তি এই মসজিদে আগমন করবে, আল্লাহ্ যেন তাকে সেদিনের মতো নিষ্পাপ করে দেন, যেদিন তার মা তাকে জন্মদান করেছেন।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় দুআ তো আল্লাহ কবুল করেছেন। আর আমি আশাবাদী আল্লাহ তাঁর তৃতীয় দুআও কবুল করেছেন।
সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৬৯২
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৪০৮
দশ.
হিজরতের উত্তম স্থান
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: سَتَكُونُ هِجْرَةٌ بَعْدَ هِجْرَةٍ، فَخِيَارُ أَهْلِ الْأَرْضِ أَلْزَمُهُمْ مُهَاجَرَ إِبْرَاهِيمَ، وَيَبْقَى فِي الْأَرْضِ شِرَارُ أَهْلِهَا تَلْفِظُهُمْ أَرْضُوهُمْ، تَقْذَرُهُمْ نَفْسُ اللَّهِ، وَتَحْشُرُهُمُ النَّارُ مَعَ الْقِرَدَةِ وَالْخَنَازِيرِ
আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ (মদীনায়) হিজরাতের পর আরেকটি হিজরাত হবে (সিরিয়াতে)। পৃথিবীবাসীর যারা এ সময় ইবরাহীম (আঃ)-এর হিজরাতের স্থানে (সিরিয়াতে) একত্রিত হবে তারাই হবে উত্তম। ঐ সময় দুনিয়ার খারাপ লোকেরাই অন্যান্য এলাকায় অবশিষ্ট থাকবে। তাদের আবাসস্থল তাদেরকে স্থানান্তরে নিক্ষেপ করবে। আল্লাহ তাদেরকে মন্দ জানেন। আগুন তাদেরকে বাঁদর ও শূকরের সঙ্গে সমবেত করবে।
আবু দাউদ-২৪৮২
(খৃষ্টপূর্ব ১৯০০ সনে ইবরাহিম আঃ হিজরত করে ফিলিস্তিনে এসেছেন, আম্বিয়া-৭১)
এগারো.
মসজিদে আকসার খেদমতে অংশগ্রহণ
যদি বাইতুল মাকদিস যিয়ারত করা বা মসজিদে আকসায় নামায আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে যে কোনোভাবে এই মসজিদের খেদমতে অংশগ্রহণের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। মাইমুনা রা. বলেন―
قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يَتَحَمَّلَ إِلَيْهِ؟ قَالَ: مَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يَأْتِيَهُ فَلْيُهْدِ إِلَيْهِ زَيْتًا يُسْرَجُ فِيهِ، فَإِنَّ مَنْ أَهْدَى إِلَيْهِ زَيْتًا كَانَ كَمَنْ قَدْ أَتَاهُ
আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যে ব্যক্তি সরাসরি বাইতুল মাকদিস যিয়ারত করতে সক্ষম না হবে, সে কী করবে?
তিনি বললেন, যে ব্যক্তি এখানে আসার সামর্থ্য রাখবে না, সে যেন এখানের বাতি জ্বালানোর জন্য তেল হাদিয়া পাঠায়। নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি তেল হাদিয়া পাঠাবে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় সওয়াবের অধিকারী হবে, যে সরাসরি বাইতুল মাকদিস যিয়ারত করেছে।
মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস ৭০৮৮
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৭৬২৬
বারো.
মসজিদে আকসা থেকে ইহরাম বেঁধে উমরা করা
এক পবিত্র ভূখণ্ড থেকে আরেক পবিত্র ভূখণ্ডে সফর করা কতইনা আনন্দ ও সৌভাগ্যের বিষয়। একারণেই হাদীস শরীফে মসজিদে আকসা থেকে ইহরাম বেঁধে উমরাহ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। হযরত উম্মে সালামাহ রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন
مَنْ أَهَلَّ بِعُمْرَةٍ مِنْ بَيْتِ الْمَقْدِسِ غُفِرَ لَهُ
যে ব্যক্তি বাইতুল মাকদিস থেকে ইহরাম বেঁধে উমরাহ্ করবে, তার গোনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৩০০১
তেরো.
বাইতুল মাকদিসের সান্নিধ্যে বসবাস
পবিত্র ভূখণ্ডের সান্নিধ্যে কিছু সময় যাপন করতে পারাই তো সৌভাগ্যের বিষয়। উপরন্তু বসবাসের জন্য যদি এক টুকরো মাটি পাওয়া যায়, তাহলে এটা তো আরো অনেক বড় প্রাপ্তি। একারণেই হাদীস শরীফে বাইতুল মাকদিসের কাছাকাছি বসবাসের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। আবু যার রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন
وَلَيُوشِكَنَّ أَنْ يَكُونَ لِلرَّجُلِ مِثْلُ شَطَنِ فَرَسِهِ مِنَ الْأَرْضِ حَيْثُ يَرَى مِنْهُ بَيْتَ الْمَقْدِسِ خَيْرٌ لَهُ مِنَ الدُّنْيَا جَمِيعًا
অচিরেই এমন সময় আসবে, যখন কোনো ব্যক্তি যদি ঘোড়ার রশি পরিমাণ জায়গাও পেয়ে যায়, যেখান থেকে বাইতুল মাকদিস দেখা যায়, তাহলে এটা তার জন্য সমগ্র দুনিয়া থেকে বেশি উত্তম হবে।
মুসতাদরাকে হাকেম ৪/৫০
চৌদ্দ. বাইতুল মাকদিসে মৃত্যুর তামান্না
পবিত্র ভূখণ্ডে জীবন অতিবাহিত করার পাশাপাশি মৃত্যুবরণ করাও একজন মুমিনের পরম কাক্সিক্ষত বিষয়। বাইতুল মাকদিস যেহেতু পবিত্রতম স্থান, তাই তো হযরত মূসা আ. এই মাটিতে মৃত্যুর আরজি পেশ করেছিলেন। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত মূসা আ.-এর মৃত্যুর ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন―
فَسَأَلَ اللهَ أَنْ يُدْنِيَهٗ مِنَ الأَرْضِ المُقَدَّسَةِ رَمْيَةً بِحَجَرٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَلَوْ كُنْتُ ثَمَّ لَأَرَيْتُكُمْ قَبْرَهٗ، إِلَى جَانِبِ الطَّرِيقِ، عِنْدَ الكَثِيبِ الأَحْمَرِ
তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেন, যেন তাঁকে পবিত্র ভূখণ্ডের এত কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখান থেকে একটি পাথর নিক্ষেপ করলে পবিত্র ভূখণ্ডে পতিত হবে। যদি আমি সেখানে থাকতাম, তবে লাল টিলার কাছে রাস্তার পাশে আমি তোমাদেরকে তাঁর কবর দেখিয়ে দিতাম।
সহীহ বুখারী, হাদীস ১৩৩৯ সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৩৭২
পনেরো. আহলে হকের অবস্থানস্থল
বাইতুল মাকদিস এবং আশপাশের অঞ্চলে সর্বদা এমন একটা জামাতের উপস্থিতি থাকবে, যারা সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। আবু উমামা বাহিলী রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন―
لَا تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي عَلَى الدِّينِ ظَاهِرِينَ لَعَدُوِّهِمْ قَاهِرِينَ لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَالَفَهُمْ إِلَّا مَا أَصَابَهُمْ مِنْ لَأْوَاءَ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ أَمْرُ اللهِ وَهُمْ كَذَلِكَ. قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ وَأَيْنَ هُمْ؟ قَالَ: بِبَيْتِ الْمَقْدِسِ وَأَكْنَافِ بَيْتِ الْمَقْدِسِ
আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা সত্যের ওপর অবিচল থাকবে। তাদের দুশমনদের ওপর বিজয়ী থাকবে। তাদের সঙ্গ ত্যাগ করে কেউ তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। অবশেষে আল্লাহর নির্দেশ আসবে আর তারা এভাবেই থেকে যাবে।
সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেসা করলেন, এই দলটির অবস্থান কোথায় হবে?
তিনি বললেন, বাইতুল মাকদিস ও তার আশেপাশে। মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২৩২০
ষোল. হক-বাতিলের চূড়ান্ত ভাগ্য নির্ধারণী লড়াই
পৃথিবীতে মানব জাতির যাত্রালগ্ন থেকেই শুরু হয়েছে হক ও বাতিলের লড়াই, সত্য ও মিথ্যার সংঘাত। এটা অতীতে ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে হক-বাতিলের চূড়ান্ত ভাগ্য নির্ধারণী লড়াই হবে বাইতুল মাকদিস অঞ্চলে। আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُقَاتِلَ الْمُسْلِمُونَ الْيَهُودَ، فَيَقْتُلُهُمُ الْمُسْلِمُونَ حَتَّى يَخْتَبِئَ الْيَهُودِيُّ مِنْ وَرَاءِ الْحَجَرِ وَالشَّجَرِ، فَيَقُولُ الْحَجَرُ أَوِ الشَّجَرُ: يَا مُسْلِمُ يَا عَبْدَ اللهِ هَذَا يَهُودِيٌّ خَلْفِي، فَتَعَالَ فَاقْتُلْهُ، إِلَّا الْغَرْقَدَ، فَإِنَّهُ مِنْ شَجَرِ الْيَهُودِ
কিয়ামত কায়েম হবে না, যতক্ষণ না মুসলিমগণ ইহুদীদের সাথে লড়াই করবে আর মুসলিমগণ তাদের হত্যা করবে। এমনকি ইহুদীরা যে পাথর বা গাছের পেছনেই আত্মগোপন করবে, সে পাথর বা গাছও বলে উঠবে, হে মুসলিম! হে আল্লাহর বান্দা! এই যে আমার পেছনে ইহুদী আছে। এসো তাকে হত্যা করো। তবে গারকাদ গাছ কিছু বলবে না; কারণ এটা ইহুদীদের গাছ।
সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৯২২,সহীহ বুখারী, হাদীস ২৯২৬
সতেরো. দাজ্জাল থেকে মুক্ত
إن الدجال يدخل الأرض إلا أربعة مساجد
مسجد المدينة ومسجد مكة والأقصى
দাজ্জাল চারটি মাসজিদে প্রবেশ করতে পারবে না: মাসজিদুল হারাম, মাসজিদুন নববী, মাসজিদুত তুর এবং মাসজিদুল আকসা। (মুসনাদে আহমাদ: হা/২৩৬৮৫ শায়খ শুআইব আরনাঊত, সহীহ)
আঠারো. হাশরের ময়দান
বাইতুল মাকদিসের গুরুত্ব এখান থেকেও বোঝা যায় যে, কিয়ামতের দিন এটাই হবে হাশরের ময়দান। হযরত মাইমুনা রা. বলেন―
يَا رَسُولَ اللهِ، أَفْتِنَا فِي بَيْتِ الْمَقْدِسِ قَالَ: هُوَ أَرْضُ الْمَحْشَرِ وَأَرْضُ الْمَنْشَرِ ائْتُوهُ فَصَلُّوا فِيهِ
হে আল্লাহর রাসূল! আমাদেরকে বাইতুল মাকদিস সম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন, কিয়ামতের দিন এটা হবে হাশরের ময়দান। এখান থেকে মানুষ নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে যাবে। তোমরা এখানে আসো এবং নামায আদায় করো...। মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস ৭০৮৮
প্রিয় মুসল্লি ভাইসব!
শাইখুল ইসলাম আল্লামা তাকী উসমানী সাহেবের একটি বক্তব্য আপনাদেরকে শোনাতে চাই।
আপনারা শুনে থাকবেন সাহয়ূনিয়্যাহ, যাকে ইংরেজিতে জায়োনিজম বলে। এটা একটা বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিকল্পনার নাম। অর্থাৎ ইহুদীরাই গোটা বিশ্ব শাসন করার অধিকার রাখে। আর ইহুদীদের কেন্দ্র ওখানে স্থাপিত হবে, যেখানে বাইতুল মুকাদ্দাস রয়েছে।
সেখান থেকে আশপাশের অঞ্চলে আক্রমণ করে করে সাম্রাজ্য বিস্তার করা হবে। এভাবে ওরা পুরো বিশ্ব শাসন করবে।
এ বিবেচনায় প্রথমে ওরা সেখানে কিছু জমি খরিদ করতে আরম্ভ করে। যাতে ইহুদীদের সেখানে এনে এনে ঘাঁটি তৈরি করা যায়। কোনো ইহুদী যদি আমাদের অঞ্চলে জমি কিনতে চায় তাহলে তো শরীয়তের মাসআলায় তাতে নিষেধ নেই।
কিন্তু ওদের ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা ছিল গোটা বিশ্ব থেকে ইহুদীদের এনে এ অঞ্চলে একটি ইসরাইলী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তারপর আশপাশের এলাকাজুড়ে তা আরো সম্প্রসারণ। সেই পরিকল্পনাকে তারা ‘গ্রেটার ইসরাইল’ নামে অভিহিত করে। সেই গ্রেটার ইসরাইলের একটি পরিকল্পনা হচ্ছে, সীমান্ত বিস্তৃত করতে করতে মদীনা মুনাওয়ারা পর্যন্ত পৌঁছানো, নাউযুবিল্লাহ। এরপর মূল টার্গেট হল, পুরো বিশ্ব শাসন করা।
যাইহোক, ইসরাইল তো প্রথমে ফিলিস্তিন অঞ্চলে জমি কেনা শুরু করেছিল। আফসোসের কথা হচ্ছে, যখন মুসলিমরা দেখল, ওরা মোটা অঙ্কের বিনিময়ে জমি নিচ্ছে তখন অনেকেই ওদের কাছে জমি বিক্রি করা শুরু করল।
এভাবে যখন একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমি হয়ে গেল। ১৯১৭ তে ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইয়াহুদী ছিল ৮%
১৯৪৮ তাদের সংখ্যা গিয়ে দাড়ায় ৩৮%।
তখন ওরা ক্রমশ আক্রমণাত্মক হয়ে স্থানীয় মুসলিমদের উৎখাত করতে শুরু করল। ব্রিটেন ও তার মিত্রগোষ্ঠীরা তো আগ থেকেই ওদের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল। বেলফোরের সেই কুখ্যাত ঘোষণার মধ্য দিয়ে ইসরাইলী রাষ্ট্রকে স্বীকৃতিও দিয়ে দিল।
উপরের আলোচনা দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল, আলআকসা বা বাইতুল মাকদিস ইসলামের দৃষ্টিতে কতটা তাৎপর্যপূর্ণ আর মুসলিম উম্মাহ্র জন্য কতই না গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, গোটা মুসলিম উম্মাহ আলআকসার বিষয়ে দায়িত্বহীনতার শিকার হয়ে পড়েছে।
আল্লাহ আমাদের মাফ করুন এবং আলআকসার মুক্তির জন্য আবারো জেগে ওঠার তাওফীক দান করুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল আলামীন।