ঈদুল আজহার জামাতের জন্য প্রস্তুত উপ-মহাদেশের প্রাচীন ও সবচেয়ে বড় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। এবার ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। এর মধ্যদিয়ে ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাত হবে মাঠটিতে।
জামাতে ইমামতি করবেন আওয়ামী সরকারের আমলে ইমামতি হারানো ইমাম কিশোরগঞ্জ শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদরাসার প্রভাষক মাওলানা জুবায়ের ইবনে আব্দুল হাই।
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন। তাদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে অজুর পানি ও ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মুসল্লিদের কোনো শারীরিক সমস্যা হলে এখানে মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও কাজ করবেন।
তিনি আরও জানান, ওয়াচ-টাওয়ার ও মাঠের আশপাশে পর্যাপ্তসংখ্যক সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে যেন নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়। পর্যাপ্ত পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করবেন। ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে মুসল্লিদের জন্য ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ লাইনে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।
ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার মোহা. কাজেম উদ্দীন বলেন, শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তাব্যবস্থায় ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো এলাকার ফুটেজগুলো আমরা সংগ্রহ করবো। নিরাপত্তার ব্যাপারে কোনো ধরনের সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এছাড়া প্রত্যেকটি গেটে আর্চওয়ে থাকবে। এরমধ্য দিয়ে এই নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে মাঠে প্রবেশ করতে হবে মুসল্লিদের। এছাড়াও প্রত্যেককে সার্চ করার জন্য মেটাল ডিটেক্টর থাকবে।
তিনি আরও জানান, মুসল্লিদের প্রবেশ পথে পর্যাপ্তসংখ্যক নিরাপত্তা ফোর্স দিয়ে চেকপোস্ট ডিউটি করা হবে। আশপাশে যেসব স্থাপনা রয়েছে, প্রত্যেকটা স্থাপনাতে পুলিশ ডিউটিতে থাকবে। এরই মধ্যে পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সেখানে কাজ করছে। আশপাশের যে হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলো রয়েছে, সেগুলোকেও নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। এবার কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা নেই।
র্যাব, ১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার মো. আশরাফুল কবির বলেন, শোলাকিয়া ঈদগাহে আসা-যাওয়ার গেটগুলোতে র্যাব সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। ওয়াচ-টাওয়ারে স্বয়ংক্রিয় স্নাইপার রাইফেল থাকবে যেন যেকোনো ধরনের নাশকতা প্রতিরোধ করা যায়। বেশকিছু প্যাট্রল কার থাকবে। সেগুলো শহরের বিভিন্ন এলাকায় টহল দেবে। এছাড়াও ট্রেনে দূরদূরান্ত থেকে ঈদ জামাতে অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে র্যাব মোতায়েন থাকবে।
ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী এবং এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। এ হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। কিন্তু তারপরও ভাটা পড়েনি ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ ময়দানের ঈদের জামাতে মুসল্লিদের সমাগমে।
জনশ্রুতি আছে, বারোভূঁইয়া নেতা ঈশা খাঁর বংশধর শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ ঈদের জামাতের মোনাজাতে ভবিষ্যতে মাঠে মুসল্লিদের প্রাচুর্যতা প্রকাশে ‘সোয়া লাখ’ কথাটি ব্যবহার করেন। অন্য একটি মতে, সেই দিনের ওই জামাতে এক লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ লোক জমায়েত হন। ফলে ‘সোয়া লাখে’র অপভ্রংশ হয়ে ‘শোলাকিয়া’ নামটি চালু হয়ে যায়।
ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী এবং এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। এ হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। কিন্তু তারপরও ভাটা পড়েনি ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ ময়দানের ঈদের জামাতে মুসল্লিদের সমাগমে।
জনশ্রুতি আছে, বারোভূঁইয়া নেতা ঈশা খাঁর বংশধর শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ ঈদের জামাতের মোনাজাতে ভবিষ্যতে মাঠে মুসল্লিদের প্রাচুর্যতা প্রকাশে ‘সোয়া লাখ’ কথাটি ব্যবহার করেন। অন্য একটি মতে, সেই দিনের ওই জামাতে এক লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ লোক জমায়েত হন। ফলে ‘সোয়া লাখে’র অপভ্রংশ হয়ে ‘শোলাকিয়া’ নামটি চালু হয়ে যায়।