কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পাগলা কান্দা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। ধ্বংস হচ্ছে এলাকার স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী ও যুবসমাজ। সন্তানদের নিয়ে অভিভাবকদের উদ্বেগ। মাদক ব্যবসার পাশাপাশি তারা নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাদকের পাশাপাশি চাঁদাবাজি, ছিনতাই, চুরি এবং অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়েই চলেছে। এদিকে একাধিকবার পুলিশকে জানালেও মিলছে না প্রতিকার। বরং দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে মাদক চক্র। ফলে এলাকার তরুণ-যুবকেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।
দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায়ীদের মাদক বিক্রি বন্ধ করার জন্য বলা হলেও তারা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এতে স্থানীয়রা এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়েন সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে সদর উপজেলা চৌদ্দশত ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পাগলা কান্দা বাজারে সন্ত্রাস, চুরি-ডাকাতি ও মাদক বিরোধী বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে। পরে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। বিক্ষোভ শেষে উত্তেজিত জনতা মাদক আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে অগ্নিসংযোগ করে।
এলাকাবাসী জানায়, মাদক কেনার জন্য আসা উচ্ছৃঙ্খল যুবকদের উৎপাতেও অতিষ্ঠ তারা। বাড়ছে ছিনতাই ও চুরির ঘটনা, তৈরি হচ্ছে চরম নিরাপত্তাহীনতা।
ব্যবসায়ী সুলতানা বলেন, এলাকার কয়েকজন যুবক দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে। এতে এলাকায় চুরি-ডাকাতিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে উল্টো হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়। পুলিশকে জানিয়েও কোনো কাজ হয় না। উল্টো পুলিশ এলাকার নিরীহ লোকজনকে হয়রানি করে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ শফিকুল মিয়া বলেন, আমরা কিছু বলতে গেলে উল্টো আমাদেরকে হুমকি ধামকি দেয়, মারধরের ভয় দেখায়। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আমাদেরকে এদের হাত থেকে রক্ষা করুন। আমরা বাঁচতে চাই। আমাদের নিরাপত্তা চাই। যদি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয় তাহলে এই এলাকার মধ্যে আমরা বসবাস করতে পারবো না।
পাগলা কান্দা বাইতুল জামে মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, মাদকসেবীর সংখ্যা দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা নামতেই বেড়ে যায় তাদের আনাগোনা। এতে এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতিও ঘটেছে। মাদকসেবীদের জ্বালায় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ, তারা শুধু মাদকই সেবন করছে না, পাশাপাশি নানা অপরাধেও জড়াচ্ছে।
আব্দুল হান্নান বলেন, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সুলতান বলেন, ব্যবসায়ীরা এলাকা প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে প্রতিবাদ করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বরং তারা মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আতাত করে তাদের ছেড়ে দেয়। এতে এলাকার কোমলমতি কিশোররা মাদকে জড়িয়ে পড়ছেন। দ্রুত মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে। সদর উপজেলাকে মাদকমুক্ত করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
মোঃ ফয়েজ উদ্দিন